চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দুটি কনটেইনারে ২২ টন পণ্য মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা থাকলে কনটেইনার খুলে এক টন পণ্য পাওয়ার অভিযোগ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আর ইসলাম এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন ও রিসার্চ শাখার (এআইআর) সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘পণ্যের চালানে জালিয়াতির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি চালানটির মাধ্যমে মানি লন্ডারি হচ্ছিল কিনা সেটিও খতিয়ে দেখতে কাস্টমস হাউজের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং ইউনিটকে চিঠি দেয়া হয়েছে।’
এখনও কারণ দর্শানোর নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন আর ইসলাম এজেন্সির মালিক রফিকুল ইসলাম।
- আরও পড়ুন: ২২ টনের জায়গায় এক টন
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কন্টেইনারে ২২ টন পণ্য ভর্তি করে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছিলাম। ডিপোতে গিয়ে এই জালিয়াতি হয়েছে। তবুও শোকজ নোটিশ পেলে আমরা তার জবাব দেব।’
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দুটি কনটেইনারে ২২ টন পণ্য মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। তবে কটেইনার দুটি খুলে পাওয়া গেছে এক টন পণ্য। গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের ইস্টার্ন লজিস্টিকস ডিপোতে এই ঘটনা শনাক্ত করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
ঢাকার মতিঝিলের বাংলা ফুড বেভারেজ নামের প্রতিষ্ঠানের নামে চালানটি মালয়েশিয়ায় রপ্তানি হচ্ছিল। এক লাখ তিন হাজার ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আর ইসলাম এজেন্সি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে গত ১৮ ও ২১ ডিসেম্বর বিল অফ এক্সপোর্ট জমা দেয়।
সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চালানটির বিপরীতে দুইটি ২০ ফুট কন্টেইনারে পণ্য বোঝাই করা হয় এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে ওঠার ডাক আসার অপেক্ষায় ডিপোতে কন্টেইনার দুইটি অবস্থান করে। প্রতি কন্টেইনারে প্রায় ১১ টন পণ্য থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তা নেই বলে গোপন সংবাদ আসে। এরপর কন্টেইনার দুইটি খুঁজে বের করে এআইআর শাখা।’
পরে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, সংশ্লিষ্ট ডিপো ও সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কন্টেইনারের সিল কেটে পণ্য পরীক্ষা করা হয়। এই সময় কন্টেইনারের সামনে সুসজ্জিত মুড়ি, ড্রাই কেক, টোস্টের কার্টুন সরিয়ে দেখা যায় পেছনে ফাঁকা এবং প্রতি কন্টেইনারে প্রায় ১১ টন পণ্য থাকার কথা থাকলেও পাওয়া যায় আধা টন করে পণ্য।’
তিনি আরও বলেন, ডিপো কর্তৃপক্ষ ঘোষণা অনুযায়ী পণ্য বুঝে নিলেও কম পণ্য থাকার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে রপ্তানির নামে টাকা সাদা করার অপচেষ্টা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তা ছাড়া রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে খাদ্য সামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রে নগদ প্রণোদনা দেয় সরকার। অবৈধভাবে সরকারি প্রণোদনা গ্রহণের অপচেষ্টাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করেছে এ চোরাচালন চক্র। এ ঘটনায় কাস্টমস আইন অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। ঘটনা অনুসন্ধান শুরু করবে কাস্টমস হাউজের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং ইউনিট।